কুয়াশায় ১২ ঘণ্টা বন্ধের পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চালু

ঘন কুয়াশায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। ফেরি বন্ধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী নৈশকোচসহ কয়েক শ গাড়ি নদী পারের জন্য অপেক্ষায় আছে। পাটুরিয়া ঘাট প্রান্তেও কয়েক শ গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে।

এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মাহাবুব আলী সরদার বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুয়াশা কমে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

মাহাবুব আলী সরদার বলেন, সপ্তম দিনের মতো গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশাও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে সামনের কিছুই যখন দেখা যাচ্ছিল না, তখন রাত ১০টা থেকে কর্তৃপক্ষ ফেরি বন্ধ করে দেয়। এর আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া কয়েকটি ফেরি দুর্ঘটনা এড়াতে মাঝনদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ফেরি ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েও আর ছাড়তে পারেনি। এক সপ্তাহ ধরে এভাবে কুয়াশা পড়ায় এ পথে নৌযান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাবাজার–শিমুলিয়া নৌপথে আট ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল
বাংলাবাজার–শিমুলিয়া নৌপথে আট ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল

ঘন কুয়াশায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে প্রায় ৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে ফেরি চলাচল। এর আগে গতকাল শনিবার রাত আড়াইটা থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। মধ্যরাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটেই আটকা পড়েছে অন্তত আট শতাধিক যানবাহন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল রাত ১১টার পর থেকে ঘাট এলাকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার মাত্রাও বাড়তে থাকে। রাত আড়াইটার দিকে কুয়াশার পরিমাণ বেড়ে গেলে নৌপথের দিকনির্দেশনামূলক বাতি অস্পষ্ট হয়ে আসে। এ সময় পদ্মা নদীতে দিক নির্ণয়ে ব্যর্থ হয় ফেরিগুলো। নৌপথে সব ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে রাত আড়াইটা থেকে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখে ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ সময় চলাচলরত ৫টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে। দুর্ঘটনা রোধে ফেরিগুলো নোঙর করে রাখা হয়। পরে প্রায় ৮ ঘণ্টা পর রোববার সকাল ১০টায় কুয়াশার তীব্রতা কমে এলে আটকে পড়া ফেরিগুলো ঘাটে এসে পৌঁছায়। একই কারণে শনিবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলও বন্ধ ছিল।বিজ্ঞাপন

ঘাটে আটকা পড়া যাত্রী আবদুল হক বলেন, ‘খুলনা থেকে রাতের গাড়িতে ঢাকা যাওয়ার জন্য উঠেছিলাম। রাত ২টার সময় বাস ঘাটে এসে পৌঁছায়। আসামাত্রই একটি ফেরিতেও উঠে যায়। কিন্তু তখন প্রচুর কুয়াশা থাকায় ফেরিটি আর ছাড়ল না। সকাল ১০টার পর ফেরিটি ছেড়েছে।’ রাকিবুল হাসান নামে আরেক যাত্রী বলেন, তীব্র শীতের মধ্যে ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার চেয়ে দুর্ভোগ আর কিছু নেই।

ঘাটের টার্মিনালে দুদিন ধরে আটকা পড়া পণ্যবাহী ট্রাকের চালক বাসার ফকির বলেন, ‘খুলনা থেকে লোড নিয়ে চট্টগ্রাম যাব। দুদিন টার্মিনালে বসে শীতে কষ্ট পোহাচ্ছি। কুয়াশায় ফেরি প্রতিদিন বন্ধ থাকায় গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। আমাদের কখন ফেরিতে তুলবে, তা ঘাটের কেউ বলছে না।’

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ভজন সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিদিনের মতো আজও মধ্যরাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সকাল ১০টার পরে কুয়াশা কমে এলে আমরা ঘাট থেকে লোড করা ফেরিগুলো ছেড়ে দিই। ৮-৯ ঘণ্টা ফেরি না চলায় ঘাটে যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। টার্মিনালে আটকা পড়া ট্রাকগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে পারাপার করব। তবে সময় লাগবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *