জলজট-যানজটে ঢাকাবাসী নাকাল
রাজধানীতে মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতেই মহানগরীর অলিগলি থেকে প্রধান সড়ক পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় জলজট ও যানজটের ধকল সয়ে চলাচল করেছে মানুষ। বেহাল সড়কের কারণে চলাচলে বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, শাহবাহ, পল্টন, মতিঝিল, পুরান ঢাকা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, গুলশান, বনানী, উত্তরার সড়কে তীব্র যানজট। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভোগান্তির মাত্রা ছড়িয়ে যায় জয়দেবপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের। মন্থরগতিতে গাড়ি চলাচল করায় দীর্ঘ সময়ে যানজটে আটকে অন্তহীন ভোগান্তিতে পড়ে হাজার মানুষ।
টঙ্গীর বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আমার অফিস যমুনা ফিউচার পার্কে। বিআরটি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের কারণে জয়দেবপুর থেকে আব্দুল্লাপুর পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা। এ অবস্থায় ভারী বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে যায়। এ কারণে ওই সড়কে গণপরিবহণ খুবই ধীরে চলাচল করে। আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লেগে যায়। তিনি বলেন, মঙ্গলবার লকডাউনের কারণে এ সড়কে গণপরিবহণ বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ির দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে জনজীবন। সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে পানি জমে যায়। আর খানাখন্দে ভরা সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গাড়ির গতি কমে যায়। বলা চলে পিঁপড়ার গতিতে গাড়ি চলাচল করেছে। জানা গেছে, রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব এখন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। দুই সিটি মেয়র এ সেবাদানের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচও করছেন। এর পরও সামান্য বৃষ্টিতে জলজটে নাকাল হচ্ছে রাজধানীবাসী।
কাজ হচ্ছে, কাজ চলছে, ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় জলজট কমবে-এমন নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও মূলত জলজটের ধকল থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসীর। এর আগে ঢাকার পানি নিষ্কাশনের প্রধান দায়িত্ব ছিল ঢাকা ওয়াসার। দুই সিটি করপোরেশন প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার জন্য ঢাকা ওয়াসাকে দায়ী করত। সে কারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটিতে হস্তান্তর করেছে। এখন দুই সিটি ২৬টি খালসহ প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পানি নিষ্কাশন ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা করছে। এর পরও শহরের জলাবদ্ধতা কমছে না। এদিকে, জলাবদ্ধতা দূর করার দায়িত্ব একক সংস্থার হাতে রাখতে রাজউক, গণপূর্ত ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ১৩টি খালের নিয়ন্ত্রণ দুই সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
রাজধানীর জলাবদ্ধতার বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম মঙ্গলবার বলেছেন, ঢাকার পানি নিষ্কাশন বা জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে দুই মেয়র কাজ করছেন। তাদের কাজের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় জলজট ও জলাবদ্ধতার স্থায়িত্ব কিছুটা কমেছে। তবে পরিস্থিতির আরও উন্নতির লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে।