বাজেটে নেই ৯০ শতাংশ মানুষ: নাগরিক ঐক্য
–
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দুর্নীতিবাজ সরকারের কাছে উপেক্ষিত দারিদ্র্য, কর্মসংস্থান আর জনকল্যাণ। তিনি বলেছেন, করোনার বিপর্যয়ে পড়ে মানুষ যখন জীবন এবং জীবিকার চরমতম সংকটে পড়েছে, তখনো এই জনগণের দেওয়া রাজস্ব এবং ঋণে তৈরি হওয়া বাজেটটি বাদ দিয়ে দিয়েছে ৯০ শতাংশ মানুষকে।
বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান এসব কথা বলেন। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়ায় নাগরিক ঐক্য এই সংবাদ সম্মেলন করে।
মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে দলের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান বলেন, এবারের প্রস্তাবিত বাজেট আগের যেকোনো বাজেটের মতো একই ফরম্যাটে তৈরি করা। এমন একটি বাজেট দেখে নানা অর্থনৈতিক থিঙ্কট্যাংক, অর্থনীতিবিদ এবং কোনো কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষের বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখিয়ে সরকার প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক উন্নতির দাবিকে হাস্যকর করে তুলেছে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকা সরকারটি তার লুটপাটের অংশীদার কিছু মানুষকে ছাড়া বাকি জনগণের কথা বাজেটে ভাববে, এমন প্রত্যাশা আমরা করিনি। তাই যে বাজেট প্রস্তাবিত হয়েছে, সেটি আমাদের কাছে একেবারেই প্রত্যাশিত এবং আমরা মোটেও বিস্মিত নই।’
মাহমুদুর রহমান বলেন, করোনার সময় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে যাচ্ছেতাই বিপর্যস্ত অবস্থা দেখা দিয়েছে, সেটা কোনোভাবেই বিস্মিত করার মতো ব্যাপার ছিল না। বছরের পর বছর ধরে দেশের স্বাস্থ্য খাতে চরমতম অবহেলা, বরাদ্দের ভয়ংকর অপ্রতুলতা এবং সীমাহীন লুটপাট পরিস্থিতিকে একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল। করোনার চাপ সেই ব্যাপারটাকেই প্রকাশ্য করেছে মাত্র।
রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি ও সংকট হবে মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, এই বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। যে অকল্পনীয় উদ্ভট রাজস্বের ওপর ভিত্তি করে এই ঘাটতি দেখানো হয়েছে, সেটা এর আশপাশেও যাবে না। অর্থাৎ সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে যে ঘাটতি দেখাচ্ছে, ঘাটতি হবে কমপক্ষে তার দ্বিগুণ।
সামাজিক নিরাপত্তায় বাজেটে বরাদ্দ কম উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্য বলছে, সামাজিক নিরাপত্তার নামে এক অবিশ্বাস্য প্রতারণা করছে সরকার। কাগজ-কলমে এই খাতে এক লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট বরাদ্দ দেখানো হচ্ছে। অথচ এতেই আছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর ভাতা-গ্র্যাচুইটি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, সঞ্চয়পত্রের সুদ, উপবৃত্তির টাকা, এমনকি প্রণোদনার জন্য দেওয়া ঋণের সুদ সমন্বয়ের অর্থ।