সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অলিম্পিকের সমাপ্তি

করোনা মহামারির ধাক্কায় এক বছর পিছিয়ে শুরু হয় অলিম্পিক গেমস। তাতেও কমেনি করোনার চোখ রাঙানি। জাপানিজদের সমালোচনা আর করোনার দাপটের মধ্যেই উদ্বোধন হয় টোকিও অলিম্পিকের। ২৩শে জুলাই শুরু হওয়া অলিম্পিক চলাকালীন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন অ্যাথলেট থেকে শুরু করে অলিম্পিকের সঙ্গে সম্পৃক্তরা। তবুও অব্যাহত ছিল গেমসের পথচলা। দর্শকশূন্য অলিম্পিকের সফল সমাপ্তি হয়েছে রোববার। আয়োজকদের চোখে যা ‘সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অলিম্পিকের সফল সমাপ্তি’।

১৯৬৪ সালে প্রথমবার অলিম্পিকের আসর বসেছিল টোকিওতে। দ্বিতীয়বার যখন অলিম্পিকের আয়োজক হলো টোকিও তখন উল্লাসে ভেসেছিল পুরো জাপান।করোনা জাপানিজদের সেই উল্লাস কেড়ে নিয়ে আসতে দেয়নি অলিম্পিকের ভেন্যুতে। ২০২৪ সালে অলিম্পিকের পরবর্তী আসর বসবে ফ্রান্সের প্যারিসে।

গত দুই আসরের মতো এবারো যুক্তরাষ্ট্রের দাপটে নেমেছে অলিম্পিকের পর্দা। অলিম্পিক মানেই লড়াইটা যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের, তবে দিনশেষে থাকবে আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্রেরই হাতে। তবে এবার দৃশ্যটা বদলে যাওয়ারই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। এইতো শেষের আগের দিনও পদক তালিকার শীর্ষে ছিল চীন। ধারণা করা হচ্ছিল চ্যাম্পিয়নের খেতাবটাও বুঝি এবার যাচ্ছে তাদেরই দখলে। তবে সব ধারণাকে মিথ্যে প্রমাণ করে দিল যুক্তরাষ্ট্র। শেষ দিনে জিতল তিন সোনা, তাতেই একটি সোনার ব্যবধানে টপকে গেল চীনকে। ফলে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে সবার ওপরে অবস্থান নিয়েই প্রতিযোগিতা শেষ করে দেশটি। তাদের দখলে গিয়েছে ৩৯টি সোনা, ৪১টি রুপা ও ৩৩টি ব্রোঞ্জ। সর্বমোট পদকের সংখ্যা তাতে দাঁড়িয়েছে ১১৩টি। দুইয়ে থাকা চীনের দখলে সোনা গিয়েছে একটি কম। ৩৮ সোনা, ৩২টি রুপা ও ১৮টি ব্রোঞ্জ নিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ করেছে দেশটি। আগের আসরে সোনার খেলা হয়েছিল ৩০৭টি। এবার হলো ৩৩৯টির। ঠিক ৩৩৯টিও নয়, ৩৪০টি। হাইজাম্পে যে শীর্ষস্থান গিয়েছে ভাগাভাগি হয়ে, তাতে জোড়া সোনা দিতে হয়েছে সে ইভেন্টে; ১১৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ঘটে এমন ঘটনা। মুতাজ বারশিম আর জিয়ানমার্কো তামবেরির পেয়েছেন পদক দুটো। জাপান ২৭ সোনা জিতে হয়েছে তৃতীয়। এর আগে জাপান কখনই ১৬টির বেশি সোনা জিততে পারেনি। ২২টি সোনা জিতে গ্রেট বৃটেন অলিম্পিক শেষ করেছে চারে থেকে।

অলিম্পিকের সেরা যারা
পুরুষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৫টি সোনা জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারু কেলেব ড্রেসেল। নারী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ৭টি সোনা জয়ের কীর্তি গড়েন অস্ট্রেলিয়ান সাঁতারু এমা ম্যাকেওন। টোকিও অলিম্পিকে সবচেয়ে কমবয়সী হিসেবে সোনা জিতেছেন জাপানের স্কেটবোর্ডার ১৩ বছর বয়সী মোমিজি নিশিয়া।

গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষদের ১০০ মিটারে চমক দেখান ইতালির মার্চেল ইয়াকবস। এবারের অলিম্পিকে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছেন এই ২৬ বছর বয়সী। সবাইকে পেছনে ফেলে ৯.৮০ সেকেন্ড সময় নিয়ে জিতে নেন সোনা। এত কম সময়ে কখনো ১০০ মিটার শেষ করার রেকর্ড ছিল না ইয়াকবসের। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স কিংবা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও কখনো পদক জয়ের স্বাদ পাননি। টানা তিনবারের সেরা উসাইন বোল্ট ছিলেন না। বোল্টের দৌড়ের মতো চমক দেখাতে পারেননি ইয়াকবস। তবে ‘অখ্যাত’ তকমা নিয়ে অলিম্পিকে আসা ইয়াকবস ১০০ মিটারে সোনা জিতে হয়ে গেলেন বিখ্যাত তারকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *