করোনাকালে দেশে ধনী বৃদ্ধি পাচ্ছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ হারে
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘করোনাকালে পৃথিবীর যেখানে চল্লিশ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যের প্রান্তসীমায় চলে গেছে, সেখানে বাংলাদেশে ধনী বৃদ্ধি পাচ্ছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ হারে। এই অসমতা মুক্তিযুদ্ধের সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সমতার ঘোষণাকে অসার প্রমাণ করেছে। সরকার এই ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের কথা স্বীকার না করলেও, এই বাস্তবতা দেশকে এক বিপদজনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে।’
শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই করোনাকালেও দেশে খুন, রাহাজানি ও ধর্ষণসহ অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনই এটার রাশ টেনে ধরতে না পারলে দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যাবে না। গোটা দেশ নৈরাজ্যের গহ্বরে পতিত হবে।’
মেনন বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ হ্রাসের ধারায় নামলেও টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হয়নি। এ নিয়ে একেক ব্যক্তি একেক কথা বলায় বিভ্রান্তি বাড়ছে। নিজ দেশে ভ্যাকসিন নিয়ে ট্রায়ালে বাধা সৃষ্টি করা, নিজ দেশের উদ্ভাবনকে সহায়তা না করা এবং সর্বোপরি মহলবিশেষের ব্যবসায়িক স্বার্থকে জনস্বার্থের ঊর্ধে স্থান দেওয়াই এর কারণ। কেবল করোনা মোকাবিলাই নয়, জনগণের সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবার স্বার্থে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে দুর্নীতি, লুটপাট ও অব্যবস্থা থেকে বের করে ঢেলে সাজাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি অসমতা দূর করতে সরকারের অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তন করতে হবে। নয়া উদারনীতিবাদী অর্থনৈতিক নীতি থেকে সাম্যবিধানের নীতিতে ফেরত আসতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সামাজিক ন্যায্যতা-সমতা প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকারকে সামনে তুলে ধরবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক জনগণতান্ত্রিক আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকারকে শাণিত করে সংগ্রাম গড়ে তুলবে।’
সভায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ঢাকায় ২৭ মার্চ লাল পতাকা মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘শিখা চিরন্তন’-এ পুস্পমাল্য অর্পণ করে এই লাল পতাকা মিছিল শুরু হয়ে শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হবে।
ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা মহানগরের রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায়। বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, মো. তৌহিদ, আনোয়ারুল ইসলাম টিপু, সাদাকাত হোসেন খান বাবুল, শাহানা ফেরদৌসী লাকী, মুর্শিদা আখতার, শিউলি সিকদার, তাপস কুমার রায় প্রমুখ।